আমি ঢাকা চলে আসার পর থেকে মা প্রচন্ড ডিপ্রেশনে চলে যায়... আমার জিনিসপত্র বিছানা ধরে ধরে সারাদিন কান্নাকাটি করে... মায়ের সারাটা জীবনই আমাদেরকে ঘিরে ছিল... নিজের ক্যারিয়ারটা পর্যন্ত স্যাক্রিফাইস করে দিল আমার আর আমার ভাইয়ের জন্য... সেখানে আমিও জীবনের তাগিদে চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে আসার পর মা একদম একা হয়ে যায়... মা জানতো আমাকে ছাড়া একা থাকা কষ্ট হয়ে যাবে, কিন্তু তাও একবারের জন্য আমাকে কোন বাধা দেননি...
এরপর আমার অসুস্থতা মাকে আরো ভেঙে দেয়। বাবাও নাকি আমার টেনশনে ঘুমের মধ্যে সারাক্ষণ আঁতকে উঠে...
তাই ঢাকা থেকে আমি সব সময় এনসিওর করি তারা যেন কোনো না কোনো রিক্রিয়েশনাল একটিভিটির মধ্যে থাকেন... যেমন বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দেখা করা, সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি।
গতকাল মায়ের এক বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল... মায়ের ছোটবেলার বন্ধু বান্ধবীদের সামনে আমি যেন মাকে ভিন্ন ভাবে দেখলাম... একদম ক্লাস টু'র বাচ্চাদের মতো মিষ্টি মিষ্টি দুষ্টুমি করছে...
কিছুদিন আগে মায়ের বন্ধুবান্ধবদের একটা রিইউনিয়নের আয়োজন হয়... এবং আমার মা ডিসিশন নেয় রিউনিয়নে যাবেন না... বলে কি "বুড়ো বয়সে বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করলে মানুষ কি বলবে" আমি ঢাকা থেকে থ্রেট দিয়ে মাকে ওখানে পাঠাই... মাকে বললাম "সবার জন্য তো যথেষ্ট করেছো, এখনো করছো... এবার একটু নিজের আনন্দটাও দেখো!
অনেক পিড়াপিড়ির পর গেল সেই রিইউনিয়নে... এবং জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টা পার করলো... ৩৩ বছর পর নিজের স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের দেখা পেল... মাকে সেদিন বহু বছর পর এতটা খুশি দেখেছি....
আমাদের বাবা মায়েরা আমাদের জন্য করতে করতে ভুলেই যায় তাঁদেরও একটা আইডেন্টিটি আছে, তাঁদেরও মাঝে মাঝে নিজেদের জন্য ভাবা উচিত...
©All content on this blog is protected by copyright law. Unauthorized use, reproduction, or distribution of any articles without permission is strictly prohibited. Legal action may be taken against violators. This image is protected by copyright law and may not be used for any explicit or sexual purposes. Unauthorized use for such content is strictly prohibited and may result in legal action. Respect the terms of use to avoid infringement.
No comments:
Post a Comment